সংসদীয় প্রার্থী ঘোষণার পর নমিনেশন পাওয়া ব্যক্তির পক্ষে সংগঠনগতভাবে কাজ করার নির্দেশনা দিয়েছেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান। তবে এর উল্টো চিত্র দেখা গেছে বান্দরবানের আলীকদম উপজেলা বিএনপিতে। প্রার্থীর মনোনয়নকে কেন্দ্র করে স্থানীয় পর্যায়ে দলটির মধ্যে দ্বন্দ্ব ও বিভাজন স্পষ্ট আকার ধারণ করেছে।
বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল (বিএনপি) থেকে বান্দরবান জেলা বিএনপির আহ্বায়ক সাচিং প্রু জেরিকে সংসদীয় প্রার্থী হিসেবে ঘোষণা করার পর উপজেলা বিএনপি সাচিং প্রু জেরি গ্রুপ এবং বাদ পড়া মনোনয়ন প্রত্যাশী ও জেলা বিএনপির সদস্য সচিব জাবেদ রেজা গ্রুপে বিভক্ত হয়ে পড়েছে।
দলীয় সূত্রে জানা যায়, দীর্ঘদিন ধরে মাঠে সাংগঠনিক কর্মকাণ্ডে সক্রিয় ছিলেন জাবেদ রেজা। আসন্ন নির্বাচনে তিনি মনোনয়নের অন্যতম দাবিদার হিসেবেই বিবেচিত ছিলেন। কিন্তু শেষ পর্যন্ত কেন্দ্রীয়ভাবে সাচিং প্রু জেরির মনোনয়ন চূড়ান্ত হলে দুই নেতার অনুসারীদের মধ্যে প্রকাশ্য অসন্তোষ দেখা দেয়।
এই বিভক্তির প্রতিফলন দেখা যায় শুক্রবার (৭ নভেম্বর) জাতীয় সংহতি ও বিপ্লব দিবস পালনের সময়। সাচিং প্রু জেরির অনুসারীরা উপজেলা সদরস্থ ইউনিয়ন বিএনপির কার্যালয়ের সামনে পথসভা আয়োজন করেন।
অপরদিকে জাবেদ রেজা সমর্থিত নেতাকর্মীরা আলীকদম বাজার ব্যবসায়ী সমিতির কার্যালয়ে আলাদা আলোচনা সভা করে দিবসটি পালন করেন। এর আগেও বিএনপির প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীতে দুই পক্ষ পৃথক র্যালি ও সভা করে নিজেদের অবস্থান জানান দেয়, যা স্থানীয় পর্যায়ে দলীয় ঐক্যকে প্রশ্নবিদ্ধ করেছে বলে জানিয়েছেন পর্যবেক্ষকরা।
এ বিষয়ে সাচিং প্রু জেরির সমর্থক এক নেতা বলেন, “কেন্দ্রের সিদ্ধান্তকে আমরা স্বাগত জানাই। দলের স্বার্থে সবাইকে একসঙ্গে কাজ করা উচিত।”
অপরদিকে জাবেদ রেজার ঘনিষ্ঠ এক নেতা অভিযোগ করে বলেন, “যারা মাঠে কাজ করেন, দলের কঠিন সময়ে সংগঠন ধরে রেখেছেন-তাদের মূল্যায়ন করা হয়নি। এতে কর্মীদের মধ্যে হতাশা তৈরি হয়েছে।”
জেলা বিএনপির একজন সিনিয়র নেতা নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, “আমাদের উদ্দেশ্য নির্বাচনে শক্ত অবস্থান তৈরি করা। বিভেদ দূর করে সবাইকে নিয়ে মাঠে নামার উদ্যোগ চলছে।”
স্থানীয় রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মতে, এই বিভাজন দীর্ঘস্থায়ী হলে আসন্ন সংসদ নির্বাচনের মাঠে বিএনপি সংগঠনিকভাবে দুর্বল অবস্থায় পড়তে পারে।