
পঞ্চগড়ের তেঁতুলিয়ায় হাতপা বেঁধে ১২ বছর বয়সী নাতি অন্তঃসত্তা হয়ে পড়ে। এ ঘটনায় বিচার পেতে অভিযুক্ত আব্দুস সোবহানের (৫৭) বিরুদ্ধে ভুক্তভোগী কিশোরীর বাবা বাদী হয়ে তেঁতুলিয়া মডেল থানায় ধর্ষণ মামলা করেন।
শনিবার দিবাগত রাতে তেঁতুলিয়া মডেল থানার পুলিশ অভিযান চালিয়ে তাকে গ্রেপ্তার করে। আব্দুস সোবহান রওশনপুর এলাকার মৃত মকবুল হোসেনের ছেলে।
ধর্ষণের শিকার ওই কিশোরী শালবাহান বালিকা মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের অষ্টম শ্রেণির শিক্ষার্থী। কিশোরী ধর্ষণের ঘটনায় ধর্ষকের শাস্তির দাবিতে ফুঁসে উঠেছেন এলাকাবাসী। শনিবার অভিযুক্ত সোবহানের গ্রেপ্তার, শাস্তি ও বিচারের দাবিতে বিক্ষোভ করে এলাকাবাসী।
এলাকাবাসীরা জানান, বাড়িতে লোকজন না থাকায় ওই কিশোরীকে একা পেয়ে হাত, পা ও মুখ বেঁধে জোর করে ধর্ষণ করে আব্দুস সোবাহান। ধর্ষণের পর ঘটনাটি কাউকে জানালে প্রাণনাশের হুমকি দেয় সে। এতে ওই কিশোরী আতংকিত হয়ে কাউকে জানায়নি। কিন্তু ধর্ষণের কারণে সে কয়েক মাস পরেই অন্ত:সত্তা হয়ে পড়েছে ওই কিশোরী। এখন সে সাত মাসের অন্ত:সত্তা।
তারা আরও জানান, দাদার মত বয়সী এরকম একজন মানুষ বিবেকহীন ভাবে অসামাজিক কাজ করতে পারে। অভিযুক্ত এই সোবাহান চরিত্রহীন লোক। তিনি এর আগেও অনেক কুকর্ম করে জরিমানা দিয়েছেন। সে কিশোরী মেয়েদের টার্গেট করে ধর্ষণ করছে। এসব নিয়ে এলাকাবাসী তার প্রতি খুবই ক্ষীপ্ত। আমরা তার দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি করছি।
ভুক্তভোগী ওই কিশোরী জানায়, অভিযুক্ত সোবহান সম্পর্কে আমার দাদা হয়। বাড়িতে প্রায়ই আসতেন। গত এপ্রিলের ৪ তারিখ শুক্রবারে বাড়িতে আমি একা ছিলাম। মা-বাবা মরিচ তুলতে গিয়েছিলেন। ঘরে শুয়ে ছিলাম। হঠাৎ বুঝে উঠার আগেই লোকটা আমাকে হাত-পা বেঁধে মুখ চেপে ধরে জোরপূর্বক ধর্ষণ করে। ঘটনাটি যাতে না বলি সে জন্য নানা ভয়ভীতি দেখায়। বলে দিলে মেরে ফেলার হুমকি দেয়। এ কারণে কাউকে কিছু জানাইনি। এর মধ্যে আমার গর্ভে সন্তান চলে এসেছে। সাত মাসের অন্ত:সত্তা। আমি এর কঠিন বিচার চাই।
ভুক্তভোগী কিশোরীর বাবা কান্না জড়িত কন্ঠে জানান, আমি পাথর শ্রমিক। পাথর তুলে জীবিকা নির্বাহ করি। ঘটনাটি জানতাম না। কখনো জানানো হয়নি। গত বৃহস্পতিবার জানতে পেরে মেয়ের বিচার পাব কিনা খুবই দু:শ্চিন্তাবোধ করছি। আমি এখন কী করবো, মেয়েটা সবেমাত্র ক্লাশ এইটে পড়ালেখা করছে। এর মধ্যে দাদার বয়সী সোবহান লোকটা মেয়েটাকে জোর করে ধর্ষণ অন্ত:সত্তা করে ফেলেছে। আমি এর সুবিচার চাই। আমার মেয়ের যে ক্ষতি করেছে তার উপযুক্ত বিচার চাই। ধর্ষক সোবহানের ফাঁসি কিংবা আইনের যথাযথ বিচারের মাধ্যমে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি কামনা করছি।
তেতুঁলিয়া উপজেলার তিরনইহাট ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আলমগীর হোসেন বলেন, ঘটনাটি আমি শুনেছি। তার বিরুদ্ধে থানায় মামলা হয়েছে। আসামি গ্রেপ্তার হয়েছে। এ ধরণের সামাজিক অবক্ষয় হতে আগামী দিনে মানুষ বের হয়ে আসতে পারে তার জন্য এলাকাবাসীর পক্ষ হতে অভিযুক্ত ধর্ষকের কঠোর শাস্তি কামনা করছি।
তেঁতুলিয়া মডেল থানার ইন্সপেক্টর (তদন্ত) নাজির হোসেন নানান, এ ঘটনায় থানায় একটি ধর্ষণ মামলা হয়েছে। অভিযুক্তকে আটক করা হয়েছে।