সুপ্রিম কোর্টের রেফারেন্সের আলোকে ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বে গঠিত অন্তর্বর্তী সরকারের শপথ ও গঠন প্রক্রিয়া বৈধ ঘোষণা করে হাইকোর্টের দেওয়া রায় বহাল রাখা হয়েছে। বৃহস্পতিবার (৪ ডিসেম্বর) এ বিষয়ে কর আপিলের শুনানি করে প্রধান বিচারপতি ড. সৈয়দ রেফাত আহমেদের নেতৃত্বে ৭ বিচারপতির পূর্ণাঙ্গ আপিল বেঞ্চ এ আদেশ দেন।
হাইকোর্টের আদেশের বিরুদ্ধে রিটকারীর লিভ টু আপিল খারিজ করে দেশের সর্বোচ্চ আদালত এ আদেশ দিলো। এর আগে বুধবার এ বিষয়ে শুনানি শেষ করে আজকের দিন ধার্য করা হয়।
রাষ্ট্রপক্ষ যুক্তি দেয়, ভ্রান্ত ধারণা ও ভুল ব্যাখ্যার ভিত্তিতে অন্তর্বর্তী সরকারের বৈধতা চ্যালেঞ্জ করা হয়েছিল। গণঅভ্যুত্থানের পর গঠিত সরকারের বৈধতা নিয়ে প্রশ্ন তোলার সুযোগ নেই এবং রিটের মাধ্যমে বিভ্রান্তি সৃষ্টির চেষ্টা হয়েছে বলে তারা দাবি করেন।
অন্যদিকে আইনজীবীদের একাংশ বলেন, যে সরকার শপথ নিয়ে সুপ্রিম কোর্ট পুনর্গঠন করেছে, সেই আদালতেই আবার তার বৈধতা নিয়ে প্রশ্ন তোলা যুক্তির পরিপন্থী। তাদের ভাষায়- জনগণের আস্থা ও বিশ্বাসই সরকারের চূড়ান্ত বৈধতার ভিত্তি।
রিটকারী সিনিয়র আইনজীবী মহসিন রশিদ যুক্তি দেন, ৫ আগস্টের গণঅভ্যুত্থানের সময় নিরাপত্তাজনিত কারণে তৎকালীন প্রধান বিচারপতি ও আপিল বিভাগের বিচারপতিরা ক্যান্টনমেন্টে অবস্থান করছিলেন। ফলে সংবিধানের ১০৬ অনুচ্ছেদ অনুযায়ী রাষ্ট্রপতির রেফারেন্সে মতামত দেওয়ার পরিস্থিতি বিদ্যমান ছিল না। তাই অন্তর্বর্তী সরকারের শপথ ও গঠনে আইনগত ত্রুটি রয়েছে বলে তিনি দাবি করেন। যদিও হাইকোর্ট এ যুক্তি গ্রহণ করেনি এবং রিট খারিজ করে।
লিভ টু আপিলের শুনানিতে আইনজীবী শিশির মনির বলেন, জনগণের বৈধতাই চূড়ান্ত বৈধতা; জনগণের বিশ্বাসই সরকারকে গ্রহণযোগ্যতা দেয়।
এ মামলার শুনানিতে আদালতের প্রতি বিরূপ মন্তব্যের কারণে রিটকারী আইনজীবী মহসিন রশিদের বিরুদ্ধে আদালত অবমাননার অভিযোগও আনা হয় এবং আপিল বিভাগ তার কাছ থেকে ব্যাখ্যা চান।