
আসন্ন ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন স্থগিত চেয়ে সুপ্রিম কোর্টের হাইকোর্ট বিভাগে করা রিট শুনানির জন্য কার্যতালিকায় এসেছে। সোমবার (৮ ডিসেম্বর) এটি শুনানির জন্য ৫২৮ নং তালিকায় আছে। হাই কোর্ট বিভাগের এনেক্স ২৮ নং কোর্টে এটি শুনানির জন্য রয়েছে।
এর আগে গত বুধবার (৩ ডিসেম্বর) রিটটি দায়ের করেন বাংলাদেশ কংগ্রেস নামের একটি রাজনৈতিক দল। দলটির মহাসচিব ও সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী অ্যাডভোকেট ইয়ারুল ইসলাম বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
তিনি বলেন, আজ আমরা দেশের আগামী সংসদ নির্বাচন যাতে না হয় সে মর্মে একটি রিট আবেদন করেছি।
কী কারণে রিট করা হয়েছে—এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, নির্বাহী বিভাগ থেকে নির্বাচন কমিশনের সচিব, রিটার্নিং কর্মকর্তা ও সহকারী রিটার্নিং কর্মকর্তা নিয়োগকে অবৈধ ঘোষণা এবং ইলেক্টোরাল সার্ভিস কমিশন গঠনের নির্দেশনা চেয়ে রিট করা হয়েছে। রিটে রুল চাওয়া হয়েছে এবং রুলের নিষ্পত্তি না হওয়া পর্যন্ত আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচন স্থগিতের আবেদন জানানো হয়েছে।
বাংলাদেশ কংগ্রেসের পক্ষ থেকে দলের মহাসচিব অ্যাডভোকেট মো. ইয়ারুল ইসলাম আজ এই রিট দায়ের করেন। আগামী সপ্তাহে বিচারপতি সিকদার মাহমুদুর রাজীর নেতৃত্বাধীন দ্বৈত বেঞ্চে রিটের শুনানি হওয়ার কথা রয়েছে।
রিটে বলা হয়েছে, নির্বাহী বিভাগের লোক দিয়ে নির্বাচন কমিশন সচিবালয় ও নির্বাচন পরিচালনা সংবিধানের সাথে সাংঘর্ষিক। বিচার বিভাগের মতো স্বাধীন প্রতিষ্ঠান হিসেবে নির্বাচন কমিশনেরও নিজস্ব লোকবল থাকা উচিত। সে জন্য ইলেক্টোরাল সার্ভিস কমিশন গঠনের নির্দেশনা চাওয়া হয়েছে।
রিটে আরও বলা হয়, সংবিধান অনুসারে নির্বাচন পরিচালনা করবে নির্বাচন কমিশন এবং নির্বাহী বিভাগ নির্বাচন কমিশনকে সকল প্রকার সহযোগিতা প্রদান করবে। কিন্তু সংবিধান লঙ্ঘন করে প্রতিটি নির্বাচন পরিচালনার দায়িত্ব নির্বাহী বিভাগকে দেওয়া হয়।
নির্বাহী বিভাগ সরকারের প্রতিনিধি হিসেবে সরকারের চাহিদা অনুযায়ী নির্বাচন পরিচালনা করে, ফলে নির্বাচন নিয়ে নানামুখী বিতর্ক তৈরি হয়।
বর্তমানে নির্বাহী বিভাগ তাদের আস্থা, গ্রহণযোগ্যতা ও দায়িত্ববোধ হারিয়ে ফেলেছে। তাদের দ্বারা সুষ্ঠু ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচন হবে—এটা কেউ বিশ্বাস করে না। এমতাবস্থায় নির্বাচন কমিশনের নিজস্ব লোকবল থেকে সচিব, রিটার্নিং কর্মকর্তা ও সহকারী রিটার্নিং কর্মকর্তা নিয়োগের নির্দেশনা চাওয়া হয়েছে রিটে।
রিট দায়ের শেষে অ্যাডভোকেট মো. ইয়ারুল ইসলাম সাংবাদিকদের বলেন, সরকার ও নির্বাচন কমিশন ইতিমধ্যে ডিসিদের সঙ্গে নির্বাচনের ব্যাপারে মতবিনিময় করছেন এবং তাদেরকে নির্বাচন পরিচালনার দায়িত্ব দেওয়ার ইঙ্গিত দিয়েছেন। তাদেরকে আবারও দায়িত্ব দিলে আরেকটি প্রভাবিত নির্বাচন হবে—এটা নিশ্চিত।
তিনি বলেন, জেলা ও উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তাদেরকে নির্বাচন প্রক্রিয়ায় যুক্ত করতে হবে এবং নির্বাচন কমিশনের সচিবকে অপসারণ করতে হবে। অন্যথায় নির্বাহী বিভাগের প্রভাবমুক্ত নিরপেক্ষ নির্বাচন সম্ভব নয়।