মিথ্যা তথ্য দিয়ে সাবেক সেনাপ্রধান জেনারেল আজিজ আহমেদের দুই ভাই এবং বঙ্গবন্ধুর খুনি মোসলেম উদ্দিনের নাম বদল করে তার সন্তানদের জাতীয় পরিচয়পত্র নেওয়ার ঘটনায় তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার কাজী হাবিবুল আউয়াল।
সোমবার (১০ জুন) নির্বাচন ভবনের মিডিয়া সেন্টারে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে এ তথ্য জানান তিনি। ইসি বিটের সাংবাদিকদের সংগঠন ‘আরএফইডি টক’ এ প্রশ্নোত্তরের জবাব দেন সিইসি।
সিইসি কাজী হাবিবুল আউয়াল বলেন, ‘ সাবেক সেনাপ্রধান আজিজ সাহেবের ভাইবোন, বঙ্গবন্ধুর খুনি মোসলেম উদ্দিনের পরিবার এবং (সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়ার রাজনৈতিক উপদেষ্টা) প্রয়াত হারিছ চৌধুরী ভুল তথ্য দিয়ে এনআইডি করেছে বলে জেনেছি। ২০-২৫ বছর পর হঠাৎ এ তথ্য জানা গেলো। এখন দুটো তদন্ত কমিটি করা হয়েছে।’
এ প্রসঙ্গে প্রধান নির্বাচন কমিশনার বলেন, ‘অপরাধ জানার পরও অপরাধ হচ্ছে। যিনি পাঁচটি (একাধিক) এনআইডি করছেন, তিনি অপরাধ করছেন। কোনও না কোনও ফাঁক-ফোকরের সুযোগে অপরাধ করছেন। কিন্তু তিনি (যিনি অপরাধ করেন) যে নির্মল ব্যক্তিত্ব সেটা বলছি না, কোনও সাফাই করি না। তার বিরুদ্ধে তদন্ত কমিটি করা হয়েছে।’
এ সময়ে সিইসি কোভিডের সময় রিপোর্ট জালিয়াতি ও সাম্প্রতিক সময়ে কারিগরি বোর্ডের সার্টিফিকেট জালিয়াতির প্রবণতার বিষয়টি তুলে ধরেন। বলেন, ‘এনআইডি’র একটা প্রযুক্তিগত দিক রয়েছে। এ প্রযুক্তির ফাঁকফোকর থাকতে পারে।… একটা জিনিসের ৯৯ দশমিক ৯৯ শতাংশ লোক সুবিধা পেয়ে থাকে, .০১ শতাংশ লোক যদি এর অপব্যবহার করে, তাদের আইনের আওতায় আনতে হবে।’
অস্থায়ীভাবে নিয়োগ পাওয়া ডেটা এন্ট্রি অপারেটরদের কেউ কেউ প্রলুব্ধ হতে পারে বলে মন্তব্য করেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার। তিনি বলেন, ‘স্থায়ী চাকরি করে তারা নয়, ডেটা এন্ট্রি অপারেটররা হয়তো প্রলুব্ধ হয়ে, লোভের বশবর্তী হয়ে কিছু কিছু কাজ করেছে। ব্যাপকভাবে হয়েছে তা কিন্তু নয়।’
গণমাধ্যমের তথ্য অনুযায়ী, আজিজ আহমেদের দুই ভাই হারিছ আহমেদ ও তোফায়েল আহমেদ (জোসেফ) নিজেদের নামের পাশাপাশি বাবা-মায়ের নামও পরিবর্তন করেছেন। হারিছ আহমেদ তার নাম পরিবর্তন করে হয়েছেন মোহাম্মদ হাসান। আর জোসেফ নাম পরিবর্তন করে হয়েছেন তানভীর আহমেদ তানজীল। তাদের এনআইডি’র তথ্য পরিবর্তনে আজিজ আহমেদ সুপারিশ করেছিলেন বলে অভিযোগ ওঠে।
এদিকে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান হত্যার পলাতক আসামি রিসালদার মোসলেম উদ্দিনের সন্তানরা কীভাবে জাতীয় পরিচয়পত্রে (এনআইডি) তাদের বাবার নাম পাল্টেছেন, সে বিষয়ে তদন্ত শুরু হয়েছে।
স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জননিরাপত্তা বিভাগের অনুরোধে নির্বাচন কমিশনের (ইসি) এনআইডি শাখা এ তদন্তে নেমেছে।