দেশের বিভিন্ন স্থানে অভিযান চালিয়ে গত এক বছরে র্যাব প্রায় ১০ হাজার মাদক ব্যবসায়ীকে গ্রেফতার করেছে। তাদের কাছ থেকে উদ্ধার করা হয়েছে ইয়াবা, হেরোইন, গাঁজা, ফেনসিডিলসহ বিভিন্ন ধরনের বিপুল পরিমাণ মাদকদ্রব্য। র্যাব সদর দপ্তর সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।
বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ-বিজিবি সূত্র জানায়, গত এক বছরে তারা ২২৮৮ কোটি ৬৬ লাখ টাকার মাদক ও চোরাই পণ্য জব্দ করেছে।
র্যাব জানায়, ২০২৩ সালে সারা দেশে মাদকবিরোধী ৪ হাজার ৪৫৩টি অভিযান পরিচালনা করা হয়। এতে গ্রেফতার করা হয় ৯ হাজার ৯৩৯ জন মাদক ব্যবসায়ীকে। অভিযানের সময় তাদের কাছ থেকে জব্দ করা হয় ৯৫ লাখ ২৯ হাজার ৪১৯ ইয়াবা, ১২৭ কেজি হেরোইন, ২৫ হাজার ৮৫৩ কেজি গাঁজা, সাড়ে ১১ কেজি আফিম, ১ লাখ ২৩ হাজার বোতল ফেনসিডিল, ১৪ হাজার ৭০০ বোতল বিদেশি মদ, ৭৮ হাজার ২৪২ লিটার চোলাই মদ, ৬ হাজার ৭৫৬ বোতল বিয়ার, ৭০ হাজার ৫২৭ পিস নেশাজাতীয় ইঞ্জেকশন, ২ লাখ ১৮ হাজার ৯৮৩ পিস নেশাজাতীয় ট্যাবলেটসহ অন্যান্য মাদকদ্রব্য।
র্যাব সদর দপ্তরের মিডিয়া উইংয়ের পরিচালক কমান্ডার খন্দকার আল মঈন জানান, ফেনসিডিল, গাঁজা, হেরোইনের পাশাপাশি বর্তমান সময়ে আলোচিত মাদকের মধ্যে রয়েছে আইস বা ক্রিস্টাল মেথ, এলএসডিসহ আরও নিত্যনতুন কিছু মাদক। র্যাব ইতোমধ্যে ৬১ কেজির বেশি আইস উদ্ধার করেছে।
বিজিবির জনসংযোগ কর্মকর্তা মো. শরিফুল ইসলাম বুধবার বিবৃতিতে জানান, গত বছরের জানুয়ারি থেকে ডিসেম্বর পর্যন্ত দেশের সীমান্ত এলাকাসহ অন্যান্য স্থানে অভিযান চালিয়ে বিজিবি ২ হাজার ২৮৮ কোটি ৬৬ লাখ ৭ হাজার টাকার বিভিন্ন প্রকারের মাদক, অস্ত্র ও চোরাই মাল জব্দ করেছে। জব্দকৃত মাদকের মধ্যে রয়েছে ১ কোটি ৪৭ লাখ ৩৪ হাজার ৭৭৪ ইয়াবা, ১৪২ কেজি ৯৪৭ গ্রাম ক্রিস্টাল মেথ আইস, ১ লাখ ৮৫ হাজার ৮৩৩ বোতল ফেনসিডিল, ৩ লাখ ৪ হাজার ৭৪৯ বোতল বিদেশি মদ, ৯ হাজার ২৬৩ লিটার বাংলা মদ, ৫৭ হাজার ৮৯৯ ক্যান বিয়ার, ২২ হাজার ২২৯ কেজি গাঁজা, ৩৩০ কেজি ৭৯৩ গ্রাম হেরোইন, ১২ কেজি ৯৯৩ গ্রাম কোকেন, ৫ লাখ ৯৮ হাজার ৫৮৯টি নেশাজাতীয় ও উত্তেজক ইঞ্জেকশন, ১ লাখ ৫৩ হাজার ২১০টি অ্যানেগ্রা/সেনেগ্রা ট্যাবলেট, ৬৫ হাজার ৬৬৪টি ইস্কাফ সিরাপ, ১ কোটি ৩৩ লাখ ৫৮ হাজার ৩৭৭টি বিভিন্ন প্রকার ওষুধ, ২১ হাজার ৫০৩ বোতল এমকেডিল/কফিডিল এবং ৩৩ লাখ ৫০ হাজার ৩৫৪টি অন্যান্য ট্যাবলেট। এছাড়া ২০২৩ সালে সীমান্তে বিজিবির অভিযানে ইয়াবা ও ক্রিস্টাল মেথ আইসসহ বিভিন্ন প্রকার মাদক পাচার ও অন্যান্য চোরাচালানে জড়িত থাকার অভিযোগে ২ হাজার ৩৬৭ জনকে এবং অবৈধভাবে সীমান্ত অতিক্রমের দায়ে ৫৯৯ জন বাংলাদেশি নাগরিক, ৭৭ জন ভারতীয় নাগরিক এবং ৮৫৭ জন মিয়ানমার নাগরিককে আটক করা হয়।
এছাড়া এক বছরে বিজিবির হাতে জব্দকৃত চোরাচালান পণ্যের মধ্যে রয়েছে ২৬০ কেজি ৫৬৭ গ্রাম স্বর্ণ, ২৪৬ কেজি ১৪৭ গ্রাম রুপা, ২ লাখ ১১ হাজার ৪৩৮টি শাড়ি, ৭৯ হাজার ৩৯০টি থ্রিপিস/শার্টপিস, ২৬ হাজার ৫৬৮টি তৈরি পোশাক, ২৭ লাখ ২৮ হাজার ২০৫ টি কসমেটিক্স সামগ্রী, ২৯ হাজার ৪৯৮ ঘনফুট কাঠ, ৯০ হাজার ৬১৩ কেজি চা পাতা, ১১ লাখ ১৩ হাজার ৮৩৬ কেজি কয়লা, ১ লাখ ৬৬ হাজার ৯৩ ঘনফুট পাথর, ১ লাখ ৫২ হাজার ১৮৮টি ইমিটেশন গহনা, ৪৩টি কষ্টিপাথরের মূর্তি, ১০ হাজার ৪০৪ কেজি কারেন্ট জাল, ১৪৯০ কেজি গ্যামাক্সিন পাউডার, ৩২৭৩ প্যাকেট কীটনাশক, ১০৭ কেজি কচ্ছপের হাড়, ৭৮টি ট্রাক/কাভার্ড ভ্যান, ৬৬টি প্রাইভেট কার/মাইক্রোবাস, ৯৯টি পিকআপ, ২৮০টি সিএনজি/ইজিবাইক এবং ৮৮২টি মোটরসাইকেল।
একই সময়ে উদ্ধারকৃত অস্ত্রের মধ্যে রয়েছে ৪৫টি পিস্তল, ২টি রাইফেল, ২টি রিভলভার, ৫৯টি সব প্রকার গান, ১ হাজার ২৪৬ রাউন্ড গুলি, ৫৩টি ম্যাগাজিন, ৬টি মর্টার শেল, ১৪টি ককটেল, ২৭ কেজি গান পাউডার, ১৯৫ কেজি সালফার এবং ২৪ কেজি ২০০ গ্রাম বিস্ফোরকসদৃশ বস্তু।