বৃহস্পতিবার, ২১ নভেম্বর ২০২৪, ০৮:৫০ অপরাহ্ন
Title :
দেবীগঞ্জে বনবিভাগের জব্দকৃত সিংহভাগ গাছ হজম করে দিলেন বিট কর্মকর্তা কামরুজ্জামান সুনির্দিষ্ট অভিযোগ পেলে ব্যবস্থা নেবেন পুলিশ সুপার পঞ্চগড়ে পুলিশের ওপেন হাউজ ডে অনুষ্ঠিত বাঞ্ছারামপুর উপজেলা বিএনপির সম্মেলন অনুষ্ঠিত -পলাশ সভাপতি,মুসা সাধারণ সম্পাদক বাঞ্ছারামপুরে ১৪৪ ধারা-আগুন জ্বালিয়ে সড়ক অবরোধ-গাড়ী ভাংচুর নব নির্বাচিত বিটিজেএ এর নেতৃবৃন্দের সাথে চিত্র সাংবাদিকদের শুভেচ্ছা বিনিময় মেহেরপুরে সুমিষ্ট কমলা ও মাল্টা চাষে সফল নুরুজ্জামান রুবেল মেহেরপুরের মোনাখালী ইউপি চেয়ারম্যান মফিজুল ইসলাম গ্রেফতার ব্রাহ্মণবাড়িয়ার বাঞ্ছারামপুরে কাউন্সিল নিয়ে বিএনপির দু’গ্রুপের সংর্ঘষ, আহত অর্ধশত একটি সুন্দর বাংলাদেশের জন্য যতটুকু সংস্কার প্রয়োজন তাই নিয়ে আমরা কাজ করছি-ফরিদা আখতার

২০২৩ সালে সড়কে ৭,৯০২ জনের প্রাণহানি

ওয়ান নিউজ ডেস্ক:
  • Update Time : শুক্রবার, ১৯ জানুয়ারী, ২০২৪
  • ২৭৩ Time View
২০২৩ সালে সড়কে ৭,৯০২ জনের প্রাণহানি

সড়ক, রেল ও নৌপথে যানবাহন দুর্ঘটনায় গত এক বছরে (২০২৩) সাড়ে ৮ হাজার মানুষের মৃত্যু হয়েছে। এর মধ্যে শুধু সড়কপথেই দুর্ঘটনায় ৭ হাজার ৯০২ জনের মৃত্যু হয়েছে। এসব ঘটনায় প্রায় ১১ হাজার মানুষ আহত হয়েছেন।

রোববার ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির (ডিআরইউ) সাগর-রুনি মিলনায়তনে এক সংবাদ সম্মেলনে যানবাহন দুর্ঘটনার এসব তথ্য তুলে ধরেন বাংলাদেশ যাত্রী কল্যাণ সমিতির মহাসচিব মোজাম্মেল হক চৌধুরী।

বছরব্যাপী পত্রিকা, টেলিভিশনসহ বিভিন্ন সংবাদমাধ্যম থেকে প্রাপ্ত তথ্যের ভিত্তিতে প্রতিবেদন তৈরি করা হয়েছে বলে জানায় সংগঠনটি।

যাত্রী কল্যাণ সমিতির প্রতিবেদনে বলা হয়, বিদায়ী ২০২৩ সালে ৬২৬১টি সড়ক দুর্ঘটনায় ৭৯০২ জন নিহত, ১০৩৭২ জন আহত হয়েছে। একই সময় রেলপথে ৫২০টি দুর্ঘটনায় ৫১২ জন নিহত, ৪৭৫ জন আহত হয়েছে। নৌপথে ১৪৮টি দুর্ঘটনায় ৯১ জন নিহত, ১৫২ জন আহত এবং ১০৯ জন নিখোঁজ রয়েছে। একই সময়ে ২০৩১টি মোটরসাইকেল দুর্ঘটনায় ২১৫২ জন নিহত ও ১৩৩৯ জন আহত হয়েছে। যা মোট দুর্ঘটনার ৩২.৪৩ শতাংশ, নিহতের ২৭.২৩ শতাংশ ও আহতের ১২.৯০ শতাংশ।

সড়ক, রেল ও নৌপথে সর্বমোট ৬৯২৯টি দুর্ঘটনায় ৮৫০৫ জন নিহত এবং ১০৯৯৯ জন আহত হয়েছে। বিগত ৯ বছরে নিবন্ধিত যানবাহনের পাশাপাশি ছোট যানবাহন বিশেষ করে মোটরসাইকেল ও ইজিবাইকের সংখ্যা ৪ থেকে ৫ গুণ বৃদ্ধি পাওয়ার পাশাপাশি ইজিবাইক, মোটরসাইকেল ও ত্রি-হুইলার সরকারের নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে জাতীয় ও আঞ্চলিক মহাসড়কে অবাধে চলাচলের কারণে সড়কে দুর্ঘটনা এবং প্রাণহানি বাড়ছে।

সড়কে দুর্ঘটনায় আক্রান্ত ১৯৫০ জন চালক, ৯৬৮ জন পথচারী, ৪৮৫ জন পরিবহণ শ্রমিক, ৬৯৭ জন শিক্ষার্থী, ৯৭ জন শিক্ষক, ১৫৪ জন বিভিন্ন বাহিনীর সদস্য, ৯৮৫ জন নারী, ৬১২ জন শিশু, ৩০ জন সাংবাদিক, ৩২ জন চিকিৎসক, ১৬ জন বীর মুক্তিযোদ্ধা, ৮ জন আইনজীবী ও ১০ জন প্রকৌশলী এবং ১১১ জন বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতাকর্মীর পরিচয় মিলেছে।

এই সময়ে সংঘটিত দুর্ঘটনায় সর্বমোট ৮৫৫০টি যানবাহনের পরিচয় মিলেছে, যার ১৬.১৫ শতাংশ বাস, ২৪.৮৪ শতাংশ ট্রাক-পিকাপ-কাভার্ডভ্যান ও লরি, ৫.৯১ শতাংশ কার-জিপ-মাইক্রোবাস, ৫.৩৯ শতাংশ সিএনজিচালিত অটোরিকশা, ২৬.০২ শতাংশ মোটরসাইকেল, ১৪.৪৭ শতাংশ ব্যাটারিচালিত রিকশা ও ইজিবাইক, ৭.১৯ শতাংশ নছিমন-করিমন-মাহিন্দ্রা-ট্রাক্টর ও লেগুনা সড়ক দুর্ঘটনার কবলে পড়েছে।

সংঘটিত মোট দুর্ঘটনার ৫২.৮৩ শতাংশ পথচারীকে গাড়ি চাপা, ২০.৫ শতাংশ মুখোমুখি সংঘর্ষ, ১৪.২৯ শতাংশ নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে খাদে পড়ে, ১১.৪ শতাংশ বিবিধ কারণে, ০.২৭ শতাংশ যানবাহনের চাকায় ওড়না প্যাঁচিয়ে এবং ০.৬৮ শতাংশ ট্রেন-যানবাহন সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে।

দুর্ঘটনার ধরন বিশ্লেষণে দেখা গেছে, এই বছর মোট সংঘটিত দুর্ঘটনার ৩৪.৮৬ শতাংশ জাতীয় মহাসড়কে, ২৮.৪১ শতাংশ আঞ্চলিক মহাসড়কে, ২৮.৫ শতাংশ ফিডার রোডে সংঘটিত হয়েছে। এছাড়াও সারা দেশে সংঘটিত মোট দুর্ঘটনার ৬.৩২ শতাংশ ঢাকা মহানগরীতে, ১.১১ শতাংশ চট্টগ্রাম মহানগরীতে, ০.৬৮ শতাংশ রেলক্রসিংয়ে সংঘটিত হয়েছে।

বিগত বছরের চেয়ে বিদায়ী বছরে ছোট যানবাহনের সংখ্যা হঠাৎ কয়েকগুণ বৃদ্ধি পাওয়া ও এসব যানবাহন অবাধে চলাচলের কারণে ফিডার রোডে ৫৫.১৯ শতাংশ, জাতীয় মহাসড়কে ১৪.৩৩ শতাংশ, রেলক্রসিং-এ ০.১৬ শতাংশ সড়ক দুর্ঘটনা বৃদ্ধি পেয়েছে। তবে এবার আঞ্চলিক মহাসড়কে ৪৯.৩৩ শতাংশ দুর্ঘটনা কমেছে।

২০২৩ সালে ঢাকা বিভাগে ১৭৩৬টি সড়ক দুর্ঘটনায় ১৭১২ জন নিহত ও ২৩৮১ জন আহত হয়েছে। চট্টগ্রাম বিভাগে ১২৩৩টি সড়ক দুর্ঘটনায় ১২০৫ জন নিহত ও ২২৯৪ জন আহত হয়েছে। খুলনা বিভাগে ৭৬৫টি সড়ক দুর্ঘটনায় ৭৬৪ জন নিহত ও ১০৭৮ জন আহত হয়েছে। বরিশাল বিভাগে ৩৮১টি সড়ক দুর্ঘটনায় ৩৭৯ জন নিহত ও ৯৯২ জন আহত হয়েছে। ময়মনসিংহ বিভাগে ৪১৮টি সড়ক দুর্ঘটনায় ৪৬৪ জন নিহত ও ৬৬৫ জন আহত হয়েছে। সিলেট বিভাগে ৩৭১টি সড়ক দুর্ঘটনায় ৪০৩ জন নিহত ও ৯২৬ জন আহত হয়েছে। রংপুর বিভাগে ৫৬৯টি সড়ক দুর্ঘটনায় ৬২৬ জন নিহত ও ৮৬৮ জন আহত হয়েছে। রাজশাহী বিভাগে ৭৮৮টি সড়ক দুর্ঘটনায় ৭৯৩ জন নিহত ও ১১৬৮ জন আহত হয়েছে।

দুর্ঘটনার কারণ
প্রতিবেদনে যানবাহন দুর্ঘটনার অন্যতম কারণ হিসেবে বলা হয়, বেপরোয়া গতি, বিপদজনক অভারটেকিং, রাস্তাঘাটের নির্মাণ ত্রুটি, ফিটনেসবিহীন যানবাহনের অবাধে চলাচল, যাত্রী ও পথচারীদের অসতর্কতা, চালকের অদক্ষতা, যানবাহন চালক ও মালিকের বেপরোয়া মনোভাব, চলন্ত অবস্থায় মোবাইল বা হেডফোন ব্যবহার, মাদক সেবন করে যানবাহন চালানো, রেলক্রসিং ও মহাসড়কে হঠাৎ ফিডার রোড থেকে যানবাহন উঠে আসা, রাস্তায় ফুটপাত না থাকা বা ফুটপাত বেদখলে থাকা, ট্রাফিক আইনের দুর্বল প্রয়োগ, ট্রাফিক আইন অমান্য করা, ছোট যানবাহনের ব্যাপক বৃদ্ধি, সড়কে চাঁদাবাজি, রাস্তার ওপর হাট-বাজার, ত্রুটিপূর্ণ যানবাহন চালানো, মালিকের অতিরিক্ত মুনাফার মানসিকতা, চালকের নিয়োগ ও কর্মঘণ্টা সুনির্দিষ্ট না থাকা, সড়কে আলোকসজ্জা না থাকা, রোড ডিভাইডার পর্যাপ্ত উঁচু না থাকা, সড়ক দুর্ঘটনা কমানোর দ্বায়িত্বরত প্রতিষ্ঠান ও সংস্থার সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের জবাবদিহি না থাকা ও দেশব্যাপী নিরাপদ-আধুনিক-স্মার্ট গণপরিবহণ ব্যবস্থার পরিবর্তে টুকটুকি-ইজিবাইক-ব্যাটারিচালিত রিকশা, মোটরসাইকেল, সিএনজি অটোরিকশা নির্ভর গণপরিবহণ ব্যবস্থার দিকে ধাবিত হওয়ার কারণে সড়ক দুর্ঘটনা ও প্রাণহানি বেপরোয়াভাবে বাড়ছে বলে উল্লেখ করে দুর্ঘটনা রোধে সংগঠনের পক্ষ থেকে ১৪ দফা সুপারিশ তুলে ধরা হয়।

সুপারিশ
*সরকারের প্রথম অগ্রাধিকার প্রকল্পে সড়ক নিরাপত্তার বিষয়টি অর্ন্তভুক্ত করা। *নির্বাচনি প্রতিশ্রুতি অনুযায়ী দ্রুত সড়ক নিরাপত্তা আইন প্রণয়ন করা। * সড়ক নিরাপত্তায় বাজেট বাড়ানো, সড়ক পরিবহন মন্ত্রণালয়ে সড়ক নিরাপত্তা ইউনিট শক্তিশালী করা। *দেশের সড়ক-মহাসড়কে রোড সাইন, ট্রাফিক চিহ্ন স্থাপন করা। জেব্রা ক্রসিং ও আলোকসজ্জার ব্যবস্থা করা। *চালকদের পেশাদার ট্রেনিং ও নৈতিক শিক্ষার ব্যবস্থা করা। *অনিয়ম-দুর্নীতি ও চাদাঁবাজি বন্ধ করা; গাড়ির নিবন্ধন, ফিটনেস ও চালকদের লাইসেন্স প্রদানের পদ্ধতি আধুনিকায়ন করা। *সড়ক দুর্ঘটনায় আর্থিক সহায়তা তহবিলে আবেদনের সময়সীমা ৬ মাস নির্ধারণ করা। *দেশব্যাপী পর্যাপ্ত মানসম্মত নতুন বাস সার্ভিস চালুর উদ্যোগ নেওয়া। * ট্রাফিক পুলিশ সদস্যদের প্রশিক্ষণের জন্য ট্রাফিক ট্রেনিং একাডেমি গড়ে তোলা । *মহাসড়কের রোড ডিভাইডার পর্যাপ্ত উঁচু করা।

সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়নের সাবেক সভাপতি আবু জাফর সূর্য, যাত্রী কল্যাণ সমিতির সহ-সভাপতি তাওহিদুল হক, যুগ্ন মহাসচিব এম মনিরুল হক, প্রচার সম্পাদক মাহমুদুল হাসান রাসেল।

Please Share This Post in Your Social Media

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

More News Of This Category
© All rights reserved © 2023 onenewsbd24.com
Developed by: A TO Z IT HOST
Tuhin