মুজিবনগর উপজেলার কোমরপুর। একসময়ের হতদরিদ্র মানুষের বসবাস থাকা ওই গ্রামটির পরিচিতি এখন কোটিপতিদের গ্রাম হিসেবে। জানা গেছে, মুজিবনগর উপজেলার শিবপুর ও কোমরপুর গ্রামের প্রায় অর্ধশত যুবক রাশিয়া প্রবাসী। তারাই সেখান থেকে অনলাইন জুয়ার কারবার করতে স্থানীয় তরুণদের প্রলুব্ধ করে। তাদের মাধ্যমে সেখান থেকে নিয়ন্ত্রণ হয় অনলাইন জুয়া।
২০১৭ সালের শুরুতে মেহেরপুরে অনলাইন জুয়া শুরু হয়। যা জেলার গ্রামে গ্রামে, পাড়ামহল্লা ও বাড়িতে বাড়িতে। শতাধিক জুয়ার সাইট ব্যবহার করে চলছে অনলাইন জুয়ার কার্যক্রম। অনলাইন মাস্টার এজেন্ট ও সাব-এজেন্টরা প্রায় প্রত্যেকেই কোটি কোটি টাকার মালিক।
কোমরপুর গ্রামের তেমনই একজন মুকুল ইসলাম। মুকুল ইসলাম একই গ্রামের মজিবার রহমানের ছেলে। এই মুকুল ইসলামের রাতারাতি পরিবর্তন দেখে নিজেকে পরিবর্তন করতে চেয়েছিলেন বন্ধু আরিফুল হক। আরিফুল হক একই উপজেলার মহাজনপুর গ্রামের রেজাউল হকের ছেলে। দ্রুত টাকা কামানোর জন্য অনলাইনের চ্যানেল নিতে বন্ধু মুকুলকে দেন ১৩ লক্ষ টাকা। কিন্তু সে গুড়ে বালি।
বিভিন্ন গণমাধ্যমে অনলাইন জুয়া নিয়ে একাধিক সংবাদ প্রকাশ, প্রশাসনের তৎপরতা বৃদ্ধি, এজেন্ট ও জুয়াড়িদের বাড়িতে পুলিশের অভিযান আত্মগোপনে চলে যায় অনেকে। মুকুলও নিজেকে আড়াল করে। এমন অবস্থায় আরিফুল চ্যানেল না পেয়ে টাকা ফেরতের জন্য চাপ দিতে থাকে মুকুলকে।
অবশেষে আরিফুল টাকা উদ্ধার করতে না পেরে চ্যানেল কেনার বিষয়টি গোপন করে জমি কেনার কারণ দেখিয়ে মুকুলের বাবা মজিবার রহমানের নামে একটি মামলা করে। মামলায় বলা হয় মজিবার রহমান জমি বিক্রয় করবে বলে ১৩ লক্ষ টাকা আরিফুলের কাছে গ্রহণ করে। পরে জমি রেজিস্ট্রি না করে দিয়ে টাকা ফেরত দেওয়ার জন্য গত ৩০ এপ্রিল-২৩ পূবালী ব্যাংকের একটি চেক প্রদান করে মজিবার রহমান। অথচ গত ২৯ এপ্রিল-২৩ চেক বহি হারিছে মর্মে মুজিবনগর থানায় একটি জিডি করা হয়। জিডি নং-১১৩৭। চেকটির অপর্যাপ্ত তহবিল প্রদানকারীর স্বাক্ষর মিল না থাকায় ডিসঅনার করে ব্যাংক কর্তৃপক্ষ।
এবিষয়ে মজিবার রহমান বলেন, জমি বিক্রয়ের বিষয়ে আরিফুলের সাথে কথা হয়নি। মুকুলের সাথে আরিফুলের লেনদেনের বিষয়ে আমি অবগত না। তারপরও আমার নামে মামলা দেওয়া হয়েছে। যে চেকটি ডিসঅনার করা হয়েছে সেটা হারিয়ে গিয়েছে। যে কারণে থানায় জিডিও করা হয়েছে। আরিফুলকে আমি চেক দিলে তাতে টাকা না থাক আমার স্বাক্ষরটা তো মিলবে। সেখানে আমার স্বাক্ষরের মিল নেই জানিয়েছে ব্যাংক কর্তৃপক্ষ। আমার ছেলে মুকুলের সাথে ঝামেলা থাকতে পারে তাই বলে আমাকে মামলা দিয়ে হয়রানি করা কি ঠিক।
এবিষয়ে জানতে আরিফুল হকের সাথে যোগাযোগ করা সম্ভব হয়নি।