মেহেরপুর সদর উপজেলার আমঝুপি ইউনিয়ন বিএনপি’র সম্মেলনকে কেন্দ্র করে দফায় দফায় হামলা ও সংঘর্ষের ঘটনা ঘটছে। আহতরা হলেন বিএনপি নেতা কাজী মিজান মেনন, চঞ্চল, মুকুল, শাকিল, শহিদুল, মিন্টু ও সানোয়ার হোসেন। ভাংচুর করা হয়েছে সদস্য সচিবের গাড়ি ও বেশ কয়েকটি মোটরসাইকেল।
শুক্রবার সকাল ১১ টা থেকে দুপুর পর্যন্ত কয়েক দফায় এ হামলা-সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। আহতদের মধ্যে কয়েকজনকে মেহেরপুর জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। আহতদের অভিযোগ, আমঝুপি ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান ও সদর উপজেলা বিএনপি’র সাবেক সাধারণ সম্পাদক সাইফুল ইসলাম এবং তার ভাই শফিকুল ইসলামের নেতৃত্বে তাদের সমর্থকরা হামলা চালান।
তারা সম্মেলনে আসা নেতাকর্মীদের বাধা দিচ্ছিলেন, আর প্রতিরোধ করতে গেলেই হামলার শিকার হতে হয়। ঘটনাটি পূর্বপরিকল্পিত এবং সম্মেলন বানচালের উদ্দেশ্যেই হামলা চালানো হয়েছে বলে জানান আহতরা। প্রত্যক্ষদর্শী সূত্রে জানা গেছে, সকাল থেকেই থেমে থেমে সংঘর্ষ চলে। লাঠিসোটা ও ইটপাটকেল নিয়ে উভয় পক্ষ মুখোমুখি হয়।
আহত কয়েকজন জানান, ইউনিয়ন সম্মেলনকে ঘিরে কয়েকদিন ধরে সাইফুল ইসলামের লোকজন হুমকি দিয়ে আসছিলেন। যে কারণে প্রথমে আমঝুপি হাইস্কুল মাঠ, তার পরে নিলকুঠি চত্বরে সম্মেলন করার কথা ছিলো। পরে তাদের বাঁধার কারণে উত্তরপাড়া প্রাথমিক বিদ্যালয়ে করার সিদ্ধান্ত হয়। সে মোতাবেক সকাল থেকে নেতাকর্মীরা সম্মেলন স্থলে যাচ্ছিল। যাওয়ার পথে সাইফুল ইসলাম ও তার ভাই শফিকুল ইসলামের নেতৃত্বে তাদের কর্মী সমর্থকরা নেতাকর্মীদের বাঁধা প্রদান করে। বাঁধা প্রতিরোধ করতে গেলে তারা লাঠি নিয়ে নেতাকর্মীদের উপর হামলা করেন।
খবর পেয়ে সেনাবাহিনী, পুলিশ ঘটনাস্থলে আসলেও তারা তাদেরও তোয়াক্কা না করে দফায় দফায় হামলা শুরু করে। পরে জেলা বিএনপির সদস্য সচিব অ্যাড. কামরুল হাসান ভাই গাড়ি বহর নিয়ে সম্মেলন যেতে গেলে গাড়ি ভাংচুর করে এবং কামরুল ভাইয়ের উপর হামলা করে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে ঘটনাস্থলে সেনাবাহিনী, র্যাব ও বিপুলসংখ্যক পুলিশ মোতায়েন করা হয়।
এবিষয়ে উপজেলা বিএনপি’র সাবেক সাধারণ সম্পাদক সাইফুল ইসলাম বলেন, দীর্ঘ দিন আমরা যারা লড়াই সংগ্রাম করে বিএনপি’র জন্য জীবনবাজি রেখেছি। সেই সকল ত্যাগী নেতাকর্মীদের বাদ দিয়ে হাইব্রিডদের নিয়ে কমিটি করা হচ্ছে। এ কারণে ওই নেতাকর্মীরা প্রতিরোধ গড়ে তুলেছে।
মেহেরপুর জেলা সদস্য সচিব অ্যাড. কামরুল হাসান অভিযোগ করে বলেন, কোনো কারণ ছাড়াই সাইফুল ইসলামের নেতাকর্মীরা আমাদের ওপর হামলা চালায়। তারা সম্মেলন বানচাল করার চেষ্টা করে। বিএনপির কেন্দ্রীয় ঘোষিত মেহেরপুরের আহ্বায়ক কমিটিকে মেনে নিতে চাননি। তাই সন্ত্রাসী কায়দায় আমাদের ওপর হামলা চালিয়েছে।
মেহেরপুর সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মেসবাহ উদ্দিন বলেন, সংঘর্ষের পরপরই পুলিশ ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনী ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। ঘটনার সঙ্গে জড়িতদের চিহ্নিত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।