বেনাপোল-পেট্রাপোল সীমান্ত অতিক্রম করে মঙ্গলবার গভীর রাতে মোট সাতটি ট্রাক ভর্তি ইলিশ পশ্চিমবঙ্গে আসলো। বাংলাদেশ সরকারের অনুমতি অনুযায়ী, ড. ইউনূস সরকারের উদ্যোগে প্রথম দফায় পাঠানো হয়েছে প্রায় ৩৭.৪৬ মেট্রিক টন ইলিশ। ব্যবসায়ীদের দাবি, দীর্ঘ অনিশ্চয়তার পর ইলিশ হাতে পেয়ে খুশির হাওয়া বাজারে। রাতেই সীমান্ত এলাকায় অপেক্ষা করছিলেন রাজ্যের একাধিক পাইকারি ব্যবসায়ী।
এই ইলিশ ভারতে রফতানি করেছে সততা ফিস, স্বর্ণালি এন্টারপ্রাইজ, তানিশা এন্টারপ্রাইজ, বিশ্বাস এন্টারপ্রাইজ ও লাকি ট্রেডিং। আর আমদানিকারক হচ্ছে ভারতের ন্যাশনাল ট্রেডিং, এফএনএস ফিস, জয় শান্তসী, মা ইন্টারন্যাশনাল ও আরজে ইন্টারন্যাশনাল। পশ্চিমবঙ্গের ফিস ইম্পোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ আনোয়ার মাকসুদ বলেন, বুধবারই হাওড়ায় পদ্মার ইলিশ ঢুকছে। ১৬০০ রুপি থেকে মাছের দাম শুরু হতে পারে।
স্থল বন্দর দিয়েই মূলত মাছ বাংলাদেশ থেকে এদেশে নিয়ে আসা হয়। উত্তর ২৪ পরগণা জেলার পেট্রাপোল সীমান্ত দিয়ে ট্রাকে করে আসা ইলিশ নিয়ে আসা হয় হাওড়া স্টেশন সংলগ্ন পাইকারি মাছ বাজারে। সেই ইলিশ গোটা রাজ্যে নিয়ে যান খুচরো বিক্রেতারা। কলকাতার বাজারে এই ইলিশের দেখা মিলতে পারে বৃহস্পতিবার। বিভিন্ন হাত ঘুরে খুচরো বাজারে ও-পার বাংলার ইলিশের দাম কেজিতে ২০০০ রুপির বেশি থাকার সমূহ সম্ভাবনা রয়েছে।
প্রতি বছর দুর্গাপুজোর আগে বাংলাদেশ থেকে ইলিশ রফতানির অনুমতি মেলে। তবে এ বছর বিশেষ পরিস্থিতির কারণে তা নিয়ে জল্পনা তৈরি হয়েছিল। শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পর নতুন সরকার ক্ষমতায় আসায় আশঙ্কা তৈরি হয়েছিল, আদৌ কি এবারের উৎসবে পদ্মার ইলিশ এদেশে পৌঁছবে? শেষ পর্যন্ত ঢাকার বাণিজ্য মন্ত্রণালয় জানায়, ভারতে ১ হাজার ২০০ টন ইলিশ রফতানির অনুমোদন দেওয়া হয়েছে।
গত বছর প্রাথমিকভাবে ৩ হাজার টনের ছাড়পত্র মিলেছিল, কিন্তু বাস্তবে এসেছিল ২ হাজার ৪২০ টন। ফলে এ বছর আগের তুলনায় অর্ধেক পরিমাণ ইলিশ পাওয়া যাবে। এবারের চালানে প্রতিটি কেজি ইলিশের রফতানি মূল্য ধরা হয়েছে বাংলাদেশি মুদ্রায় ১ হাজার ৫২৫ টাকা। তবে এদেশে বাজারে কত দামে উঠবে, তা নির্ধারণ করবে রাজ্যের পাইকারি ব্যবসায়ীরা। আপাতত উৎসবের সময়ে কলকাতাসহ রাজ্যের বিভিন্ন বাজারে সেই ইলিশ ছড়িয়ে পড়বে।
এখন অপেক্ষা, বাকি চালান কবে সীমান্ত পেরিয়ে ঢুকবে। পুজোর আগে আরও একাধিক দফায় ইলিশ আসবে বলে আশা করছেন এপারের ব্যবসায়ীরা।