সর্বজনীন পেনশন স্কিমে নিবন্ধন করে চাঁদা পরিশোধ করেছেন ৩ লাখ ৭৩ হাজার ৯৮৭ জন। ২০২৪-২৫ অর্থবছরে পেনশন স্কিমে মুনাফার পরিমাণ ১৬ কোটি ৩৩ লাখ ৪ হাজার ২৪ টাকা। সোমবার (৬ অক্টোবর) জাতীয় পেনশন কর্তৃপক্ষের পরিচালনা পর্ষদ সভায় এ তথ্য জানানো হয়েছে। সভায় সভাপতিত্ব করেন জাতীয় পেনশন কর্তৃপক্ষের পরিচালনা পর্ষদের চেয়ারম্যান অর্থ উপদেষ্টা ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ।
অর্থ মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, চলতি বছরের ৩০ জুন পর্যন্ত ৩ লাখ ৭৩ হাজার ৯৮৭ জন মাসিক চাঁদা জমা দিয়েছেন। মাসিক চাঁদা এবং ২০২৩-২৪ অর্থবছরের সর্বজনীন পেনশন স্কিমের প্রারম্ভিক স্থিতিসহ মোট জমা করা অর্থের পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ১৮৭ কোটি ৯৭ লাখ ৯০ হাজার ৫৪ টাকা।
জমা করা অর্থের ২০২৪-২৫ অর্থবছরের মুনাফার পরিমাণ ১৬ কোটি ৩৩ লাখ ৪ হাজার ২৩ টাকা। পরিচালনা পর্ষদ এ মুনাফা বিনিয়োগ সময়কালের ভিত্তিতে হিস্যা অনুযায়ী বিনিয়োগকারীদের পেনশন হিসাবে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। চাঁদাদাতারা তাদের পেনশন আইডি এবং পাসওয়ার্ড ব্যবহার করে প্রাপ্ত মুনাফার পরিমাণ দেখতে পারবেন। ২০২৪-২৫ অর্থবছরে সর্বোচ্চ মুনাফা পাওয়ার হার ১১ দশমিক ৬১ শতাংশ।
সভায় সুরক্ষা স্কিমে চাঁদার হার বাড়ানোর সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। সুরক্ষা স্কিমটি স্বকর্মে নিয়োজিতদের জন্য। স্বকর্মে নিয়োজিত ক্যাটাগরিতে যেমন নিম্ন আয়ের লোক রয়েছেন তেমনি উচ্চ আয়ের লোকও রয়েছেন। এ স্কিমে বর্তমানে সর্বোচ্চ চাঁদার হার ৫ হাজার টাকা। উচ্চ আয়ের নাগরিকদের আকৃষ্ট করার লক্ষ্যে প্রগতি পেনশন স্কিমের সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে সুরক্ষা স্কিমে সর্বোচ্চ জমার হার ১৫ হাজার টাকা করা হয়েছে।
সভায় আউটসোর্সিং সেবাকর্মীদের পেনশন স্কিমে সম্পৃক্ত করতে অর্থ বিভাগ থেকে জারি করা আউটসোর্সিং প্রক্রিয়ায় সেবাগ্রহণ নীতিমালা, ২০২৫ এর আওতায় আউটসোর্সিং সেবাকর্মীদের জন্য সর্বজনীন পেনশন স্কিমে অংশগ্রহণের সুযোগ রাখার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
আউটসোর্সিং সেবাকর্মীরা প্রগতি স্কিমে অংশ নিতে পারবেন। প্রগতি স্কিমের সর্বনিম্ন মাসিক চাঁদার হার ১ হাজার টাকা হলেও আউটসোর্সিং সেবাকর্মীদের জন্য সহনীয় করার লক্ষ্যে শুধু আউটসোর্সিং সেবাকর্মীদের জন্য প্রগতি স্কিমে সর্বনিম্ন মাসিক চাঁদার হার ৫০০ টাকা নির্ধারণ করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
সামর্থ্য থাকলে সেবাকর্মীরা আরও বেশি হারের চাঁদার স্কিমে অংশ নিতে পারবেন। আউটসোর্সিং সেবাকর্মীদের এ স্কিমে অংশগ্রহণের জন্য মাসিক চাঁদার পুরোটাই সেবাকর্মী বহন করবেন। এক্ষেত্রে প্রতিষ্ঠানের পক্ষ থেকে কোনও অংশগ্রহণ থাকবে না।
পেনশন স্কিমের ইসলামিক ভার্সন
সভায় সর্বজনীন পেনশন স্কিমের ইসলামিক ভার্সন চালু সংক্রান্ত বিষয় নিয়ে আলোচনা হয়। এ সংক্রান্ত বেস্ট প্র্যাকটিস পর্যালোচনা করে ধারণাপত্র তৈরির কাজ সম্পন্ন করে সর্বজনীন পেনশন স্কিমের ইসলামিক ভার্সন চালুর উদ্যোগ নেওয়ার ওপর গুরুত্বারোপ করা হয়।
সভায় পেনশন স্কিমে বিমা সুবিধা চালু করার বিষয়েও আলোচনা হয়। সর্বজনীন পেনশন স্কিমে বিমা সুবিধা চালুকরণের সম্ভাব্যতা যাচাইয়ের কাজ চলমান রয়েছে। অ্যাকচুয়ারি অ্যানালাইসিসের ভিত্তিতে এ বিষয়ে ধারণাপত্র তৈরির কাজ জরুরি ভিত্তিতে সম্পন্ন করার জন্য পরিচালনা পর্ষদ থেকে জাতীয় পেনশন কর্তৃপক্ষকে পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।