সোমবার, ০৭ জুলাই ২০২৫, ০৪:৩২ পূর্বাহ্ন

দেবীগঞ্জে পূর্ণাঙ্গ কমিটি না করে এডহক কমিটি করে স্বার্থ হাসিলের চেষ্টা শিক্ষকের বিরুদ্ধে 

একেএম বজলুর রহমান, পঞ্চগড়
  • Update Time : শনিবার, ২৯ জুন, ২০২৪
  • ১৫৭ Time View
দেবীগঞ্জে পূর্ণাঙ্গ কমিটি না করে এডহক কমিটি করে স্বার্থ হাসিলের চেষ্টা শিক্ষকের বিরুদ্ধে 
দেবীগঞ্জে পূর্ণাঙ্গ কমিটি না করে এডহক কমিটি করে স্বার্থ হাসিলের চেষ্টা শিক্ষকের বিরুদ্ধে 
চুড়ান্ত ভোটার তালিকা অনুমোদন করা হয় চলতি বছরের ২৭ ফেব্রুয়ারি। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা অভিভাবক সদস্য নির্বাচন গ্রহন করার জন্য প্রিজাইডিং অফিসারও নিয়োগ দেন। কিন্তু তাতে নিজের স্বার্থ হবেনা সেটা বুঝতে পেরে ম্যানেজিং কমিটির নির্বাচনের আনুষ্ঠানিকতা না করে উল্টো পথ ধরে এডহক কমিটি গঠন করার অপচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন বিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক তপন কুমার রায়।
ঘটনাটি ঘটেছে পঞ্চগড়ের দেবীগঞ্জ উপজেলার বিনয়পুর উচ্চ বিদ্যালয়ে। সরজমিনে বিদ্যালয়ে গিয়ে কর্তৃপক্ষের সাথে ও স্থানীয় লোকজনের সাথে কথা বলে এসব তথ্য জানা যায়।
বিনয়পুর উচ্চ বিদ্যালয়ের পূর্বের কমিটি গঠন করা হয়েছিল ২০২২ সালের ২৬ মে। ডাঃ আব্দুল ওয়াহাব খাঁনকে সভাপতি করে ম্যানেজিং কমিটি গঠন করা হয়েছিল। কমিটির সদস্যরা ছিলেন আবুল কাশেম, শহিদুল ইসলাম, মামুন, প্রমত রায়, ফুলমতি রানী রায়, নরেশ চন্দ্র মোস্তাফিজুর রহমান ও কমিতা রানী। দুই বছর মেয়াদের এ কমিটির মেয়াদ শেষ হয় চলতি বছরের ২৫ মে। তখনকার সময়ের প্রধান শিক্ষক অবসরে যাওয়ার পর সহকারি প্রধান শিক্ষক ২০২৩ সালের ২ অক্টোবর ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষকের দায়িত্বভার গ্রহন করেন।
দায়িত্ব নেয়ার পর ম্যানেজিং কমিটির মেয়াদ শেষ হয়ে গেলে নতুন কমিটি গঠন করার জন্য খসড়া ভোটার তালিকা করার পর যাচাই বাছাই করে চুড়ান্ত ভোটার তালিকা অনুমোদন দেয়া হয়। নির্বাচন গ্রহন করার জন্য প্রিজাইডিং অফিসারও নির্বাচন করেন দেবীগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা। কিন্তু ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক তপন কুমার রায় অজ্ঞাত কারনে নির্বাচন গ্রহন না করে এডহক কমিটি করার অপচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন। এডহক কমিটি করার জন্য ফাইলপত্র রেডি করে বিভিন্ন দপ্তরে জমায়ও দিয়েছেন।
ক্ষোভ প্রকাশ করে স্থানীয় লোকজন বলেন, গোপনে প্রধান শিক্ষক কাগজপত্র জমা দেয়া ঠিক করেননি। সে স্থানীয় লোকজনদের সাথে কথা বলতে পারতো।  তারা আরও বিদ্যালয়ের সাবেক সভাপতি ডাঃ আব্দুল ওয়াহাব খান এডহক কমিটি গঠন করার ব্যাপারে তিনি যথেষ্ট আন্তরিক ছিলেন। পূর্নাঙ্গ কমিটি গঠন করার জন্য জন্য তিনি ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষককে প্রয়োজনীয় দিক নির্দেশনাও দিয়েছিলেন।
এমনকি কোন বিদ্যালয়ের শিক্ষকরা যদি প্রধান শিক্ষক হিসেবে নিয়োগ নিতে চান তাহলে ওই শিক্ষকের সকল শ্রেনীতেই দ্বিতীয় বিভাগ হতে হবে। এক্ষেত্রে ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক তপন কুমার রায়ের বেশির ভাগ সনদের ফলাফলে তৃতীয় শ্রেনী রয়েছে।
আরেক ব্যত্তি জানান, তড়িঘড়ি করে এডহক কমিটি করার জন্য ফাইলপত্র রেডি করেছেন। যাতে দীর্ঘদিন এডহক কমিটি দিয়ে তপন কুমার রায় তার নিজের স্বার্থ হাসিল করতে পারেন। তারা বলেন, ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক তপন কুমার রায় ১৯৯৫ সালে যোগদান করেন। ১৯৯৭ সালে এমপিও ভুক্ত হন।
স্থানীয়রা আরও জানান, কোন শিক্ষক যদি বেড়াতে, ঘুরতে বা বিদেশে যেতে চায় তাহলে ভিসা করার সময়ে পেশা চাকুরীজীবি উল্লেখ  করতে হবে। সাধারন ভাবে বিদেশে গেলে পেশা কৃষি লিখতে হবে। একজন চাকুরীজীবি শিক্ষক কিভাবে তথ্য গোপন করে কৃষি লিখে বিদেশে গেলেন। এমপিও ভুক্ত হওয়ার পরে পাসপোর্ট, ভিসা করার পরেও সেখানে তিনি পেশা কৃষি উল্লেখ করেছেন। এক্ষেত্রে তিনি অনিয়মের আশ্রয় নিয়েছেন।
ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক তপন কুমার রায় বলেন, আমি ঢাকায় গিয়েছিলাম। ভারতে যাইনি। তবে তার কাছে পাসপোর্ট ও ভিসার কাগজ পত্র দেখতে চাইলে তিনি দেখাতে অনীহা প্রকাশ করেন। তবে যদি কোন বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক বিদেশে যান তাহলে সভাপতির কাছ থেকে এনওসি নিয়ে যেতে হবে। অথচ সে এনওসি না নিয়েই বিদেশ গেছেন। ইতিপূর্বেও তিনি এনওসি না নিয়ে বিদেশে গিয়েছিলেন।
তপন কুমার রায় আরও বলেন, এডহক কমিটি করার জন্য এমপি অনুমোদন দিয়েছেন। এডহক কমিটি হওয়ার পর পূর্নাঙ্গ কমিটি গঠন করা হবে।
দেবীগঞ্জ উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার ( ভারপ্রাপ্ত)  সাইফুল ইসলাম বলেন, পাসপোর্ট করার সময় যদি সে তথ্য গোপন করে তাহলে সেটা পুলিশ তদন্ত করবে আর সভাপতির কাছ থেকে এনওসি নিয়ে সভাপতির অনুমতি নিয়েই রেজুলেশন করে তারপর বিদেশ যেতে পারবে। সে যদি অনিয়ম ভাবে তথ্য গোপন করে বিদেশে যায় তাহলে তাকে শোকজ করে আমাদেরকে জানাবে।

Please Share This Post in Your Social Media

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

More News Of This Category
© All rights reserved © 2023 onenewsbd24.com
Developed by: FAZLY RABBY
Tuhin