পঞ্চগড়ের দেবীগঞ্জ উপজেলার পাবলিক ক্লাবের নিয়ন্ত্রণে থাকা ফুটবল খেলার মাঠ দখল করে দেবীগঞ্জ কেজি স্কুল ভবন নির্মাণ করার অভিযোগ উঠেছে।
দেবীগঞ্জ পাবলিক খেলার মাঠটি ক্রীড়ামোদী খেলোয়াড়রা প্রতিদিন বিকেল বেলা ফুটবল ও ক্রিকেট খেলতো। মাঠটি দেবীগঞ্জ পাবলিক ক্লাবের। মাঠের পশ্চিম দক্ষিণ দিকে দেবীগঞ্জ কেজি স্কুল অবস্থিত। যে জায়গাটিতে কেজি স্কুল অবস্থিত সে জায়গাটি পঞ্চগড় জেলা পরিষদের। কেজি স্কুলটি ১৯৮৭ সালে স্থাপিত। জেলা পরিষদের কাছ থেকে মাসিক ২শ টাকা হারে ভাড়া নিয়ে কার্যক্রম পরিচালনা শুরু করে।
১৯৮৭ সালে ডাঃ মেজর (অবঃ) তনবিরুজ্জামান দেবীগঞ্জ আদর্শ শিশু শিক্ষা নিকেতন স্কুলটি প্রতিষ্টা করে দিনোরজ্জনকে অধ্যক্ষ হিসেবে নিয়োগ দেন। পরবর্তীতে নাম সংশোধন করে দেবীগঞ্জ কেজি স্কুল করেন।
খোজ নিয়ে জানা যায়, জেলা পরিষদকে গত ১৩ বছর ধরে ভাড়া দেননা। বছরে ২৪শ টাকা হলে ১৩ বছরে ৩১ হাজার ২শ টাকা ভাড়া দেননি। কেজি স্কুলের শিক্ষার পাশাপাশি সেখানে চলছে শিক্ষার নামে ব্যবসা। বছরে লক্ষ লক্ষ টাকা আয় হলেও জেলা পরিষদের ভাড়া দেয়া হয়না।
বিগত শেখ হাসিনার সরকারের সময় রাজনৈতিক প্রভাব খাটিয়ে কেজি স্কুলের সভাপতি হন আ স ম নুরুজ্জামান। তিনি দেবীগঞ্জ উপজেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সভাপতি ও পঞ্চগড় জেলা আওয়ামী লীগের বর্তমান সহ সভাপতি হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন।
তিনি প্রভাব খাটিয়ে দেবীগঞ্জ কেজি স্কুলের সভাপতি হয়ে কেজি স্কুলের আয় ব্যয়ের হিসেবে অস্বচ্ছতাসহ সেখানে ব্যবসা শুরু করেন। তিনি সভাপতি হয়ে ২ বছর আগে দেবীগঞ্জ পাবলিক ক্লাবের মাঠের পশ্চিম দক্ষিণ দিকে মাঠের কিছু অংশ দখল করে নেন। ছাত্র ছাত্রীদের অভিভাবকদের বিশ্রামের কথা বলে সেখানে একটি ছাপড়া ঘর নির্মান করেন। পরে ক্ষমতার দাপট দেখিয়ে সেই ছাপড়া ঘরের জায়গায় ভবন তৈরি করেন। সেখানে আবার সীমানা প্রাচীর দিয়ে আরও জায়গা দখল করার জন্য পরিকল্পনা নিচ্ছেন বলে জানান মাঠে খেলতে আসা খেলোয়াড়রা।
মাঠে খেলতে আসা খেলোয়াড়রা জানান, পাবলিক ক্লাবের মাঠ যদি দেবীগঞ্জ কেজি স্কুলের মত অন্যান্য স্কুলও দখল করে নেয় তাহলে আমরা খেলাধুলা করবো কোন জায়গায়। খেলার মাঠটি দেবীগঞ্জ কেজি স্কুলের হাত থেকে উদ্ধার করার জন্য আমরা দেবীগঞ্জ পাবলিক ক্লাবের ব্যবস্থা নিতে এবং মাঠের জমি উদ্ধার করতে প্রশাসনের হস্তক্ষেপ কামনা করছি।
দেবীগঞ্জ কেজি স্কুলের অধ্যক্ষ মাহ আলম শাহ এর ব্যবহারিত মোবাইল নাম্বারে একাধিক বার ফোন দেয়া হলেও তিনি ফোন রিসিভ না করার কারনে তার বক্তব্য জানা যায়নি।
কেজি স্কুলের সাবেক সভাপতি আ স ম নুরুজ্জামান বলেন, মাঠটি পাবলিক ক্লাবের নয়। মাঠটি সরকারি। সেখানে একটি বিশ্রামাগার ছিল শিক্ষার্থীদের অভিভাবকদের জন্য। আমরা জেলা পরিষদের কাছ থেকে বাৎসরিক হিসেবে ভাড়া নিয়েছি। এটি জেলার মধ্যে একটি ঐতিহ্যবাহী স্কুল।
তিনি আরও বলেন, গত ৫ তারিখের পর থেকে আমি সভাপতির দায়িত্বে নাই। বর্তমানে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সভাপতির দায়িত্ব পালন করছেন।
দেবীগঞ্জ পাবলিক ক্লাবের সভাপতি সাবেক উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান আব্দুল মালেক চিশতী বলেন, মাঠটি পাবলিক ক্লাবের না। এটি খেলাধুলার জন্য উন্নোক্ত করে দেয়া হয়েছে যাতে কেউ দখল করতে না পারে। কেজি স্কুলের পূর্বপাশে অভিভাবকদের জন্য একটি ছাপড়া ঘর করা হয় সেটি থেকে দুটি ঘর নির্মান করা হয়। তবে এটা ঠিক করে নাই৷
দেবীগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা শরীফুল আলম বলেন, মাঠ দখল হচ্ছেনা। সেখানে ঘর করা হয়েছে সেটি খাস জমি। স্কুলের এসেম্বলির সমস্যার কারনে তারা রাস্তাটি আমার কাছে চেয়ে আবেদন করেছে। এটি প্রক্রিয়াধীন রয়েছে।