পঞ্চগড়ের দেবীগঞ্জে শারদীয় দূর্গোৎসব নির্বিঘ্নে উদযাপন উপলক্ষে পুরোহিত ও মন্দির কমিটিসহ সনাতন ধর্মীয়দের সাথে মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। বৃহস্পতিবার (১৯ সেপ্টেম্বর) পঞ্চগড় জেলার দেবীগঞ্জ উপজেলার দেবীডুবা ইউনিয়নের লক্ষিরহাট বাজারের গরুহাটিতে এ মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত হয়। বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী হিন্দু বৌদ্ধ খ্রীষ্টান কল্যান ফ্রন্ট দেবীগঞ্জ উপজেলা শাখা এ মতবিনিময় সভার আয়োজন করে। পঞ্চগড় জেলা শাখার আহবায়ক প্রেমাশিষ কুমার রায়।
মতবিনিময় সভায় প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন জাতীয়তাবাদী দল বিএনপির কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির পল্লী উন্নয়ন বিষয়ক সম্পাদক ও জেলা বিএনপির সদস্য সচিব ফরহাদ হোসেন আজাদ।
প্রধান অতিথি ফরহাদ হোসেন আজাদ বলেন, আমি ভিন্ন ধর্মাবলম্বী হলেও সনাতন ধর্মীয় অনুষ্ঠানে সহযোগিতা করেছি। আমার বাড়ির সামনেই রয়েছে কালীমন্দির। সেখানে আওয়ামী লীগ কোন অনুদান দেয়নি।
আমি প্রত্যেক মন্দিরে চাল দিয়েছি। প্রায় ৫শ কেজি চাল দিয়েছি। আমি প্রত্যেকটা ধর্মকে সম্মান করি। তিনি বলেন, আমি এদেশে জম্ম নিয়ে কেন অন্য দেশে চলে যাবো৷ তারেক রহমানের নির্দেশে প্রত্যেকটি মন্দিরে পাহারা দিতে হবে৷ আমরা পাহারা দিয়েছি। হিন্দুরা দেশ থেকে ভারত চলে যাচ্ছেন আমি খবর শুনে তাদের কাছে গিয়ে জিজ্ঞেস করেছি তোমরা কেন ভারত যাবে, তখন তারা বললো ফেসবুকে দেখেছি হিন্দুদের উপর হামলা করছে তাই। তখন আমি তাদের বলেছি তোমরা ঘরে ফিরে যাও তোমাদের বাড়ি ঘর পাহারা দিবো। গত নির্বাচনে আমি জয়ী হয়েছিলাম কিন্তু আমাকে জয়ী ঘোষনা করা হয়নি। হিন্দুদের পাশাপাশি মুসলমানদের ঈদে মিলাদুন্নবী উপলক্ষেও দিয়েছি।
তিনি আরও বলেন, শুধু নামাজ রোজা করলেই দায়িত্ব শেষ হয়না। সামাজিক ভাবেও আমাদের দায়িত্ব পালন করতে হবে। পিতা মাতাকেও সম্মান করতে হবে৷ পিতা মাতার সম্মান, শ্রদ্ধা করবে না সে কখনও জীবনে সফলতা অর্জন করতে পারবেনা। আজকে আমি যে সম্মান, সফলতা অর্জন করেছি তা আমার বা মায়ের দোয়ায়।
সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দেশ থেকে পালিয়ে গিয়েছে আপনাদের কথা চিন্তাও করেনি। আমি প্রত্যেকটি পুজা মন্ডমে পাহারা দিবো। প্রয়োজন পড়ে সব পুজা মন্ডমে সিসি ক্যামেরা বসাবো। যাতে কেউ উৎসৃংখল করতে পারেনা। পুজা মন্ডমে আর্থিক ভাবে সহযোগিতা করার জন্য আমরা চেষ্টা করবো। আগামী পুজা মন্ডমে কোন হামলা হবেনা।
অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন দেবীগঞ্জ উপজেলা বিএনপির আহবায়ক আইয়ুব আলী, যুগ্ম আহবায়ক নজরুল ইসলাম, দেবীডুবা ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি মজনু সরকার, সাধারন সম্পাদক রাসেদ প্রধান, উপজেলা যুবদলের আহবায়ক মুশফিকুর রহমান রাজু, দন্ডপাল ইউনিয়ন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত সভাপতি গোলাপ হোসেন, সাধারন সম্পাদক সফিকুল ইসলাম, দেবীডুবা ইউনিয়নের মহিলা দলের সভাপতি মিতু আক্তার, সাধারন সম্পাদক আকলিমা খাতুনসহ সনাতন ধর্মের বিভিন্ন ওয়ার্ডের লোকজন।
বক্তারা বলেন, আওয়ামী লীগের সময় আমরা পুজা উৎযাপন করেছি। কিন্তু দেশের পরিস্থিতি অন্য দিকে চরে যাওয়ার পর আমরা নিশ্চিত ছিলাম না যে আমরা পুজা উৎযাপন করতে পারবো নাকি। কিন্তু বিএনপির নেতা কর্মীরা আমাদেরকে উৎসাহ দিয়েছিন যে, আমরা নির্বিঘ্নে পুজা উৎযাপন করতে পারবো। তারা আরও বলেন, আওয়ামী লীগ কোন সময়ে আমাদের নিয়ে মতবিনিময় সভা করেননি। কিন্তু বিএনপি আমাদের সাথে মতবিনিময় করে আমাদের পরামর্শ নিলেন।